×
  • প্রকাশিত : ২০২৫-১০-২৮
  • ২৯ বার পঠিত

মো: রিয়াজ, স্টাফ রিপোর্টার শেরপুর :

শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার সীমান্তবর্তী গারো পাহাড় ঘেঁষা এলাকায় দিন দিন বেড়ে চলছে বন্য হাতীর তাণ্ডব। এই তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এলাকার চাষযোগ্য জমি, ফসল ও বসতবাড়ি। স্থানীয় জনগণ অভিযোগ করেছেন, হাতী ও মানুষের এই দ্বন্দ্ব কমাতে বন বিভাগ কার্যকর কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না। ফলে প্রতিদিন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে সীমান্তবর্তী গ্রামের মানুষ।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার রানীশিমুল ইউনিয়নের, মালাকোচা, হাতিবর, সিংগিজানি, সোনাঝড়ি, ঝুলগাওসহ কয়েকটি গ্রাম দীর্ঘদিন ধরেই বন্য হাতীর আক্রমণের শিকার হচ্ছে। প্রতিদিন রাতের আঁধারে ১৫ থেকে ২০টি বন্য হাতী পাহাড় থেকে নেমে এসে ফসলি জমিতে ঢুকে ধান, আখসহ নানা ফসল নষ্ট করছে। অনেক সময় হাতীরা ঘরবাড়ি ভেঙে দেয়।

ভুক্তভোগী কৃষক ফিরু মিয়া বলেন, এই সপ্তাহে তিনবার হাতীর পাল আমাদের জমির ধান খেয়ে ফেলেছে। প্রায় ৬০ শতক জমির ফসল শেষ হয়ে গেছে। বন বিভাগে জানালেও কোনো কাজ হয়নি। প্রতি বছর হাতি আমার জমি ক্ষয়ক্ষতি করে কিন্তু একবার ও ক্ষতিপূরন পায় নাই।

একই গ্রামের কৃষক রুমান জানান, আমরা নিজেরা ড্রাম বাজিয়ে আর মশাল জ্বালিয়ে হাতী তাড়াই। বন বিভাগের লোকজন শুধু দূর থেকে দেখে যায়।

রানীশিমুল ইউনিয়নের বাসিন্দা রাকিব বলেন, বেদ্যুতিক বাতি জ্বালালে হাতি ক্ষয়ক্ষতি কম করে, কিন্তু বন বিভাগ থেকে বেদ্যুতিক বেড়া বা বাতি জ্বালানো নিষেধ করা হয়েছে, আমরা অন্ধকারে হাতি তাড়ায় আমাদের জিবনের ঝুকি নিয়ে, বন বিভাগ হাতি মানুষের দ্বন্দে কার্যকর কোন প্রদক্ষেপ নেই না।

মালাকোচা এলিফ্যান্ট রেন্সপন্স টিমের সভাপতি বলেন, আগে হাতি প্রতিরোধে বন বিভাগ থেকে কেরোসিন দিয়ে সহোযোগিতা করলেও এবার আমরা কিছুই পায় নাই।

এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য সেলিম মিয়া বলেন, বছরের পর বছর ধরে এই সমস্যা চলছে। আমরা বহুবার বন বিভাগকে জানিয়েছি, কিন্তু তারা শুধু আশ্বাস দেয়। কোনো স্থায়ী ব্যবস্থা নেয়নি।

বালিজুড়ি বিট কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম বলেন হাতীর চলাচল সীমান্তের ওপার থেকে। আমরা স্থানীয়দের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছি এবং ক্ষতির পরিমাণ যাচাই করে ক্ষতিপূরণের প্রস্তাব পাঠাচ্ছি।

তবে স্থানীয়দের দাবি, শুধু পরামর্শে সমাধান হবে না। হাতীর আক্রমণ রোধে স্থায়ী বেড়া, আলোকসজ্জা, হাতী প্রতিরোধ কমিটি গঠনসহ কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞদের মতে, মানুষের বসতি ও কৃষিজমি ক্রমেই হাতীর আবাসস্থলে ঢুকে পড়ায় এ সংঘাত বাড়ছে। তাই মানুষ ও বন্যপ্রাণীর সহাবস্থান নিশ্চিত করতে সমন্বিত উদ্যোগ এখন সময়ের দাবি। শ্রীবরদীতে হাতী-মানুষের এই চলমান দ্বন্দ্বে ক্ষতির শিকার হচ্ছে শত শত পরিবার, কিন্তু বন বিভাগের নিষ্ক্রিয়তা ও উদাসীনতায় তাদের দুর্ভোগ যেন দিন দিন আরও গভীর হচ্ছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
lube
ফেসবুকে আমরা...
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat