মোঃ রাফসান জানি, ভোলা ;
ভোলায় 'থ্যালাসেমিয়া' রোগে আক্রান্ত মো: ঈমন (১৮)। দরিদ্র পরিবারের সন্তান হওয়ায় তার চিকিৎসা করাতে হিমশিম খাচ্ছিল তার পরিবার। রিক্সা চালক বাবা তার ছেলের চিকিৎসা করাতে গিয়ে নিজের জমি ও বসতভিটাও বিক্রি করেছেন। এখন অন্যের বাড়িতে ভাড়া থাকেন ঈমনের পরিবার। টাকার অভাবে প্রায় চিকিৎসা বন্ধে পথে এসেছিল। অবশেষে তার পাশে দাঁড়িয়েছেন ভোলার গণমাধ্যম কর্মীরা। এতে শস্তি ফিরেছে দরিদ্র ইমনের পরিবারের মাঝে।
ঈমন ভোলা সদর উপজেলার বাপ্তা ইউনিয়নের মহাজনের পোল এলাকার আবুল বাশারের ছেলে। বর্তমানে ওই এলাকার লাল মিয়া হাওলাদার বাড়িতে ভাড়া থাকেন তার পরিবার। 
অসুস্থ্য মো: ঈমন জানান, তারা এক ভাই এক বোন। প্রায় ৭/৮ বছর আগে তার থ্যালাসেমিয়া রোগটি ধরা পরে। পরে তার বাবা দরিদ্র রিক্সা চালক ছেলের চিকিৎসার জন্য ভোলা, বরিশাল ও ঢাকার বিভিন্ন স্থানে গিয়ে চিকিৎসা করিয়েছেন। চিকিৎসার খরচ জোগাতে তার বাবা জমি ও বসতভিটা বিক্রি করে এপর্যন্ত প্রায় ১০/১২ লাখ টাকা খরচ করেছেন। এরপর তার বাবা রিক্সা চালিয়ে তার চিকিৎসা করাতে পারছিল না। তাই বাধ্য হয়ে কয়েক বছর আগে সে ভোলার শহরের কাঁচা বাজারের একটি ডিমের দোকানে কর্মচারীর চাকরি করেন। সেখানে সে মাসে ৮  হাজার টাকা বেতন পান।  
তিনি আরো জানান, তার প্রতি মাসে প্রায় দুই হাজার টাকার ঔষধ লাগে। প্রতি মাসেই ডাক্তার ও শরীরের বিভিন্ন পরীক্ষা করাতে হয়। এবং প্রতি ৩/৪ মাসে তার শরীরে রক্ত দিতে হয়। সব মিলে বে-বহুল খরচ গুনতে হয় তার পরিবারের। কিন্ত দরিদ্র রিক্সা চালক বাবার আয় ও তার বেতনের টাকায় বর্তমানে চিকিৎসা করাতে হিমশিম খাচ্ছিল তারা। চিকিৎসা প্রায় বন্ধের পথে আসছিল। ওই সময় একদিন ডিম কিনতে গেলে পরিচয় হয় "ভোলা জার্নালিস্ট ফোরাম" সভাপতি মো: শাহিন কাদের ভাইর সাথে তিনি আমাকে দেখে জিজ্ঞাস করেন। আমি তাকে সব জানাই। এরপর তিনি আশ্বাস দিয়েছেন আমার চিকিৎসার সব খরচ বহনের। এখন তারা আমার পাশে দাঁড়িয়েছেন। আমি ও আমার পরিবার খুব খুশি। তাদের জন্য আমি ও আমার পরিবার অনেক অনেক দোয়া করি। 
ভোলা জার্নালিস্ট ফোরাম'র সভাপতি মো: শাহিন কাদের জানান, আজ শনিবার (৪ অক্টোবর) থেকে আমিসহ আমার সংগঠনের সকল সদস্য গণমাধ্যম কর্মীরা ঈমনের পাশে রয়েছি। তার চিকিৎসা, ঔষধসহ যাবতীয় খরচ আমরা ভোলা জার্নালিস্ট ফোরাম'র সকল সদস্য বহন করবো। এবং আগামী ৬ মাসের মধ্যে আমরা ঈমনকে আমরা ঢাকা নিয়ে উন্নত চিকিৎসা করাবো। তাকে সম্পূর্ণ সুস্থ্য করে তোলার জন্য যা যা করা আমরা তাই করবো। 
তিনি আরো জানান, আজ ঈমনকে আমি এক ব্যাগ রক্ত দিয়েছি। পরবর্তীতে আমাদের সংগঠনের যাদের রক্তের গ্রুপ এ পজেটিভ তারা রক্ত দিবেন ঈমনকে। 
ওই সংগঠনের সাধারন সম্পাদক মো: ইমরান হোসেন জানান, আমাদের সভাপতির মাধ্যমে ৪/৫ দিন আগে ঈমনের বিষয়টি জানতে পেরেছি। পরে আমরা আজ শনিবার সংগঠনের মিটিং ডেকে সবাই মিলে সামর্থ অনুয়ায়ী সহযোগীতা করেছি। এই সহযোগীর ধারা আমাদের অব্যাহত থাকবো।
 
                       এ জাতীয় আরো খবর..