ডেস্ক নিউজ :
চোরাই, অবৈধ ও নিবন্ধনহীন মোবাইল হ্যান্ডসেট নিয়ন্ত্রণে ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিফিকেশন রেজিস্টার (এনইআইআর) প্রকল্প চালু করতে যাচ্ছে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। আগামী ১৬ ডিসেম্বর এই প্রকল্পের উদ্বোধন করা হবে। গতকাল বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসির বোর্ডরুমে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২০২১ ও ২০২৪ সালে এনইআইআর প্রকল্প শুরুর কথা থাকলেও নানা কারণে তা চালু করা সম্ভব হয়নি। এনইআইআর চালুর মাধ্যমে দেশের নেটওয়ার্কে ব্যবহৃত প্রতিটি মোবাইল হ্যান্ডসেটের নিবন্ধন হবে। ফলে সহজেই বোঝা যাবে কোন সেট বৈধ না অবৈধ।
সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, এনইআইআর চালুর মাধ্যমে দেশের টেলিযোগাযোগ খাতে নতুন অধ্যায়ের সূচনা হবে। এটি এমন একটি কেন্দ্রীয় ব্যবস্থা, যা প্রতিটি মোবাইল হ্যান্ডসেটের আন্তর্জাতিকভাবে অনুমোদিত আইএমইআই নম্বরকে ব্যবহারকারীর জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ও ব্যবহৃত সিমের সঙ্গে যুক্ত করে নিবন্ধিত করবে। ফলে বৈধ ও অবৈধ হ্যান্ডসেট সহজেই চিহ্নিত করা সম্ভব হবে। এই ব্যবস্থা চালু হলে অবৈধভাবে আমদানিকৃত বা নকল মোবাইল ফোনের ব্যবহার বন্ধ হবে সম্পূর্ণভাবে। এতে সরকার প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ক্ষতি থেকে রক্ষা পাবে এবং দেশীয় মোবাইল উৎপাদন শিল্প আরও সুরক্ষিত হবে। পাশাপাশি চুরি বা অপরাধমূলক কাজে ব্যবহৃত ডিভাইস শনাক্ত ও ব্লক করা সম্ভব হওয়ায় অপরাধ দমনেও এটি কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব জানান, এনইআইআর চালুর ফলে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) জালিয়াতি, সিম প্রতারণা ও স্ক্যাম কার্যকরভাবে প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে। একই সঙ্গে আরও শক্তিশালী হবে ইকেওয়াইসি যাচাই।
সভাপতির বক্তব্যে বিটিআরসি চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) এমদাদ উল বারী বলেন, দেশে বর্তমানে প্রায় ৩৭ থেকে ৩৮ শতাংশ হ্যান্ডসেট এখনও নন-স্মার্ট বা সাধারণ ধরনের। এতে ডিজিটাল সেবার পরিধি সীমিত হয়ে যাচ্ছে। স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত হ্যান্ডসেটের ব্যবহার বাড়াতে এবং বৈধ বাজার সুরক্ষায় এনইআইআর চালুর উদ্যোগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
চুরি হওয়া বা অপরাধে ব্যবহৃত মোবাইল ট্র্যাকিংয়েও এনইআইআর কার্যকর হবে বলে জানান তিনি। এমদাদ উল বারী বলেন, এখন থেকে প্রয়োজনে আমরা নেটওয়ার্ক থেকেই কোনো নির্দিষ্ট ফোন বন্ধ করে দিতে পারব। মোবাইল সিম রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রমও এখন আরও কঠোর করা হয়েছে। ২০১৬-১৭ সালে সিম রেজিস্ট্রেশন ও বায়োমেট্রিক যাচাইয়ের পরও কিছু অনিয়ম ছিল। বর্তমানে এনআইডিপ্রতি সিম সংখ্যা ১৫ থেকে কমিয়ে ১০টিতে আনা হয়েছে। ১ নভেম্বর থেকেই অতিরিক্ত সিম নিষ্ক্রিয় করবে অপারেটররা।