শরীয়তপুর জেলা:
শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলায় জমি দখলকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্যকর একটি ঘটনা ঘটেছে। উপজেলার উত্তর তাড়াবুনিয়া ইউনিয়নের স্বাস্থ্যকর্মী তাহানুন ইসলাম অভিযোগ করেছেন, আদালতের আদেশ অমান্য করে একদল ব্যক্তি তার দলিলমূলে ক্রয়কৃত ও ভোগদখলীয় জমি জোরপূর্বক দখলের চেষ্টা করছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, তাহানুন ইসলামের মা মোসা: সমমেহের বেগম, স্বামী: জহুরুল হক সরকার ১৯৮০ সালে দলিলের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট সম্পত্তি ক্রয় করেন এবং তখন থেকেই তাঁরা মালিক ও ভোগদখলকারী হিসেবে রয়েছেন। পরবর্তীতে ভুলবশত উক্ত জমির বিআরএস রেকর্ড মৃত আব্দুর রহমান সরকারের নামে অন্তর্ভুক্ত হয়। এ নিয়ে বর্তমানে বিজ্ঞ ভেদরগঞ্জ সহকারী জজ আদালতে দেওয়ানি মোকদ্দমা নং ১৮৪/২৪ (বিআরএস রেকর্ড সংশোধনী মামলা) বিচারাধীন রয়েছে।
সম্প্রতি আলাউদ্দিন সরকার, পিতা মৃত আব্দুর রহমান সরকার, ওসমান সরকার, গ্রাম ডাক্তার রিপন হাওলাদার এবং গনি মালের নেতৃত্বে কিছু লোকজন তাহানুন ইসলামের জমিতে প্রবেশ করে পাকা ধান নষ্ট করে জোরপূর্বক সরিষা রোপণ করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এমনকি ধান নষ্ট করতে জমিতে বিষ ও সার প্রয়োগ করা হয়েছে বলেও জানা যায়।
এ ঘটনায় তাহানুন ইসলাম সখিপুর থানায় লিখিত সাধারণ ডায়েরি (জিডি) দায়ের করেছেন এবং আদালতেও মামলা বিচারাধীন রয়েছে।
অভিযোগকারী তাহানুন ইসলাম বলেন,
“আমি সরকারি চাকরিজীবী। দীর্ঘদিন ধরে শান্তিপূর্ণভাবে ওই জমিতে কৃষিকাজ করে আসছি। হঠাৎ করে আলাউদ্দিন সরকার ও তার লোকজন এসে জোরপূর্বক দখলের চেষ্টা চালায় এবং আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। আমি থানায় জিডি করেছি এবং আদালতের আশ্রয় নিয়েছি, কিন্তু হয়রানি বন্ধ হচ্ছে না।”
অভিযুক্ত আলাউদ্দিন সরকার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,
“এই জমির বিআরএস রেকর্ড আমার বাবার নামে। তাহানুন ইসলাম বলেছেন রেকর্ড ভুলবশত আমাদের নামে হয়েছে, তাই তিনি আদালতে সংশোধনী মামলা করেছেন বলে শুনেছি। আমি কোনো দখল করিনি, কাগজপত্র অনুযায়ী আমি চাষাবাদ করতে গিয়েছিলাম।”
এ বিষয়ে সখিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ফয়েজ আহম্মেদ বলেন,
“অভিযোগটি পেয়েছি। তদন্ত চলছে। প্রাথমিকভাবে উভয় পক্ষকে আইনগত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিষয়টি নিষ্পত্তির পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজন হলে তদন্ত শেষে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
স্থানীয় বাসিন্দা সামসুদ্দিন বলেন,
“আমরা দেখেছি তাহানুন ইসলাম বহু বছর ধরে ওই জমিতে ফসল ফলাচ্ছেন। সম্প্রতি আলাউদ্দিন সরকার গং তাদের জমিতে ধান থাকা অবস্থায় জোরপূর্বক ধান নষ্ট করে সরিষা রোপণের চেষ্টা করেছে। এতে ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বিষয়টি আদালতে রয়েছে, তাই প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।”
জমি দখল নিয়ে দুই পক্ষের এই বিরোধে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। স্থানীয় সচেতন মহল দ্রুত প্রশাসনিক হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছে, যাতে আইনের মাধ্যমে সঠিক বিচার নিশ্চিত হয়।