ভোলায় বিএনপি ও বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি–আন্দালিভ রহমান পার্থ) সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। ভোলা শহরের নতুন বাজার এলাকায় শনিবার (১ নভেম্বর) ১২.৩০ সময় ঘণ্টাব্যাপী এ সংঘর্ষে পুলিশ সাংবাদিকসহ প্রায় শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন।
পুলিশ সদস্য হলেন, ভোলা সদর থানার উপপরিদর্শক আউয়াল ও সাংবাদিক হলেন, দৈনিক আজকের ভোলার সহ-সম্পাদক ও বাংলাবাজার পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি এম শাহরিয়ার ঝিলন, নিউজ২৪ –এর ক্যামেরাপরসন রানা ইসলাম।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নতুন বাজারে বিজেপি জেলা কার্যালয়ের সামনে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে নতুন বাজার থেকে প্রেসক্লাব পর্যন্ত এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। সংঘর্ষে বেশ কয়েকটি গাড়ি, দোকান ও রাজনৈতিক দলের পোস্টার–ব্যানার ভাঙচুর করা হয়।
খবর পেয়ে পুলিশ ও নৌবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে পুরো এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পরিস্থিতি শান্ত রাখতে নতুন বাজার ও বিজেপি জেলা কার্যালয় এলাকাসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
ভোলা সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, সংঘর্ষে আহত অন্তত ২০ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। তবে দুই দলই দাবি করছে, তাদের অন্তত ৫০ জন করে আহত হয়েছেন। উন্নত চিকিৎসার জন্য কয়েকজনকে বরিশালে পাঠানো হয়েছে।
ভোলা সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সাহাদাত মো. হাছনাইন পারভেজ বলেন, পরিস্থিতি বর্তমানে শান্ত রয়েছে। এখনো কেউ কোনো লিখিত অভিযোগ দেয়নি। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের প্রায় ৪০ জন আহত হয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সংঘর্ষের পর ভোলা জেলা বিএনপি তাদের কার্যালয়ে বেলা দুইটায় সংবাদ সম্মেলন করে। সেখানে জেলা বিএনপির সদস্যসচিব রাইসুল আলম অভিযোগ করে বলেন, তাঁদের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মিছিলে পেছন দিক থেকে বিজেপির কর্মীরা অতর্কিত হামলা চালান। তিনি বলেন, ‘আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে আমাদের ওপর এই হামলা চালানো হয়েছে। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করছিলাম।’
সংবাদ সম্মেলনে জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. এনামুল হক বলেন, তাঁদের সদর উপজেলা কমিটির সদস্যসচিব মো. হেলাল উদ্দিনকে বিজেপির নেতারা কটাক্ষ করায় তাঁরা আজ প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। সকাল ১০টায় জেলা বিএনপির কার্যালয়ে প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার পর দুপুর ১২টার দিকে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। বিক্ষোভ মিছিলটি বাংলা স্কুল মোড়ে গেলে দুটি বোমা বিস্ফোরণ ও গুলির আওয়াজ পাওয়া যায়। এ সময় তাঁদের লক্ষ্য করে বিজেপির কর্মীরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। এরপরই সংঘর্ষ হয়েছে। এতে বিএনপির অন্তত ২৫ জন আহত হন।
সম্প্রতি ভোলার বিভিন্ন জায়গায় বিজেপির বিরুদ্ধে ঝাড়ুমিছিলসহ নানা কর্মসূচি পালন করেছে বিএনপি। এর প্রতিবাদে আজ প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ মিছিল করে বিজেপি। দলের ভোলা জেলার সাধারণ সম্পাদক মোতাসিম বিল্লাহ বলেন, বিজেপির নেতা–কর্মীরা প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ মিছিল শেষে দলীয় কার্যালয়ে সভা করছিলেন। এ সময় বিএনপির নেতা–কর্মীরা অতর্কিত হামলা চালিয়েছেন। এতে তাঁদের ৫০ জনের অধিক আহত হয়েছেন। এর মধ্যে চারজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাঁদেরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশালে পাঠানো হয়েছে।
ভোলা বিজেপির প্রচার সম্পাদক মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘বিএনপির একটি পক্ষ আমাদের কার্যালয়ে হামলা চালিয়েছে। আমাদের শান্তিপূর্ণ সভায় বিএনপির লোক এসে ভাঙচুর করেছেন।